ব্রহ্মমায়া
এ খেলা পুরনো নয় বেশি
এবং আবহমানের
অন্ধকার জানে না চাঁদের কুটুম্বিতা
নৌকার বেহাল পর্ব নিয়ে
অস্তরাগ মাখে এই ঘরদোর
লতাগুল্মের ধার ঘেঁষে যে পুকুরে
তুমি বাসন ধোও
সেখানে প্রতিদিন একটি ছায়ার লাশ ভেসে ওঠে
লাশ ক্রমে স্টেশন রোড ধরে
গুমটির নিচে বসে
খেলে প্রাক পুরাণিক পাশা
অবশেষে ঝাঁ-চকচকে রেললাইন লিখে রাখে
এক ছাপোষা ছায়ার অবিন্যস্ত নাতিদীর্ঘ উপন্যাস
তার প্রতিটি অধ্যায়ের শীর্ষনাম হয়ে ওঠে ব্রহ্মমায়া
জন্মান্তরের ভোজ
বুনিয়াদি ক্লান্তি থেকে ফিরে রোজ এই বাতিস্তম্ভের নিচে বসি।
সমুদ্রের ঢেউ দেখি, আরক্তিম বালিশয্যা, চিদমূর্ছনার ভোজ, কিছু বাজিও।
কখনও পাহাড় দেখি, যত দূর চোখ যায় সেও এক সিন্ধুময় সুধাদৃশ্য।
দূর থেকে আসে ঠাণ্ডা বাতাসের সেবা, প্রাইমারি ইস্কুলের গেট খুলে দেয় ---
শুরু থেকে শেষ পিরিয়ড শুধুই মিড-ডে মিল। নাবালক
জেনে যায়, কতখানি গহন হলে সমুদ্রই আসলে পাহাড় হয়।
নৌকাপর্ব
বিপ্রতীপ নৌকা আর আঁশটে গন্ধ মাখা চর থেকে
নিশিরাতের মাছশিকার ব্যর্থ হয়ে গেলে পড়ে থাকে
ভোর রঙের উল্টানো আকাশ
একটি পাখি এসে আবার তাকে সোজা করে দেয়
বনানীর ভেতর থেকে রক্ত গড়াতে গড়াতে
শেষপর্যন্ত ভিজিয়ে দেয় আরক্ত নদীর সিঁথি
রাতের কাঠকুটো ভস্ম হয়ে গেলে
সাবানজলের খোঁজে আবারও তুমি
শুরু করবে আর একটি নৌকাপর্ব
বিগত শীতের কোলাজ
কাল যে জলায় ভেসে উঠেছিল সোলার সাজ আজ সেখানে ঝলমলে পূর্ণিমা।
মেঘের কিনারে সেই ভাসমান মাছেদের সুদীর্ঘ জীবন কামনায়
এয়োতি পুকুরের উপবাস। আজন্মের জল বাষ্প হয় মৃত নারীদের কথা ভেবে।
তখনও কার্নিশে জোড়া কবুতর। ঠাণ্ডা রোদ আর খড়কুটোর ভেতর নিয়তিভঙ্গের শাঁখা।
উঠোন চিরে মেলা শাড়ির ছায়া আজও দোল খায় নিশ্চিন্তে
এসো বকম, নিঙাড়ি নিঙাড়ি এসো নীলকণ্ঠ; ও দৈব মাছ তুমিও এসো--
উলের বল, বিড়াল আর যত নিশুত স্যাণ্ডো গেঞ্জি এসো--
এই দর্জির মায়ারাত ভেসে উঠুক বিহান জলে ও পূর্ণিমায়...
No comments:
Post a Comment