জিরো বাউন্ডারি কবিতার ষষ্ঠ সংখ্যার জন্য লেখা জমা দেওয়ার লাস্ট ডেট জুলাই মাসের ১০ তারিখ। দুটো কবিতা বা কবিতা বিষয়ক লেখা নিজের এক কপি ছবি সমেত পাঠিয়ে দিন আমাদের ইমেলে-0boundarykabita17@gmail.com

Sunday, June 17, 2018

প্রচ্ছদ


                       ছবি ঋণ :- জয়ন্ত ঢ্যাং





আফজল আলি





হাঁটছি। ছোট ছোট পায়ে । জিবাক এবার পঞ্চম সংখ্যায় পড়ল। এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে জিরো বাউন্ডারি পত্রিকার print version এর আত্মপ্রকাশ সংখ্যা । এবং বহু আকাঙ্ক্ষিত- জিরো বাউন্ডারি কনসেপ্ট - বইটি । এমনটা নয় যে এই কাজগুলো বলার মতো এমন কিছু । কিন্তু বললাম এই  কারণে যে আমাদের হাঁটা বা চলার প্রক্রিয়া জারি রয়েছে। এবং আমাদের whatsapp group প্রায় এক বছর হতে  চলল সমানভাবে সক্রিয়। 25 জন থেকে 125। তরুণ কবিরা কবিতা লেখার উদ্যোম এবং নতুনত্ব খুঁজে পাচ্ছে, পাচ্ছে নতুন ভাবে,  নতুন আঙ্গিকে কবিতা লেখার রসদ, দিশা যা বাংলা কবিতার বর্তমানের অবস্থার ( থোড় বড়ি খাড়া ) বিরুদ্ধে এক নতুন ধাক্কা বা jerking। সাহিত্য এগিয়ে যায় তার বদ্ধ অবস্থা কাটিয়ে , আসে নতুনের স্বাদ। কিন্তু এই নতুন এমনি এমনি আসে না । নতুন আসার ক্ষেত্রে কিছু কিছু কার্যকারণ ভূমিকা  ও  পদক্ষেপ থাকে। জিরো বাউন্ডারি হয়তো সেই ভূমিকাই নিয়েছে এই সময়ে দাঁড়িয়ে । 

একটা বিষয় আমরা পরিষ্কার করতে পেরেছি যে কবিতার ক্ষেত্রে কাব্যধর্মীতাকে বজায় রেখে নতুন কথন বলন আনার চেষ্টা করছি যার মধ্যে পাঠকের কিছু space অন্তত যেন থাকে । এবং জিরো বাউন্ডারি কবিতার ছাঁকনি বেশ কঠিন । জিরো বাউন্ডারি ছাড়পত্র পাওয়া কবিতা নিশ্চয় কয়েক কদম এগিয়ে থাকা এবং বেশ আলাদা, কিন্তু শুষ্কং কাষ্টং নয়। সেই ভাবেই আমরা কবিতা এবং লেখা নির্বাচন করি। 

তবু অবাক হতে হয়,  আমাদের এই অঙ্কুর অবস্থার মধ্যে জিরো বাউন্ডারিকে বিনাশ করার প্রচেষ্টা কেউ কেউ করছেন। জিরো বাউন্ডারির নীতি সংঘাতে নয়, শান্তিতে সহাবস্থানে। তাই আমরা চারাগাছ বাঁচিয়ে চলছি। এটা ঠিক নতুন কিছু চিন্তা বা thoughts আনলে তাকে ছেঁটে ফেলা বা গুঁড়িয়ে দেওয়ার চক্রান্ত থাকে প্রবল। এ সবই তো স্বাভাবিক। মানুষের ভালো বা মঙ্গলের জন্য নতুন কিছু কথা বলতে চায় জিরো বাউন্ডারি দর্শন  -   তা মানুষ গ্রহণ করতে পারে , অথবা বর্জন করতে পারে  - তাতে কোনো অসুবিধা নেই । কিন্তু আমরা আমাদের কথা বলব,   কাজ করব । তবে আমরা কোনো ভাবেই one  or two man army নই।  আমাদের একটা সুন্দর সুঠাম টিম আছে  ,  পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় তা বিস্তারিত  -  এটা আমাদের পক্ষে কম পাওয়া নয় । 

সিনিয়র ও তরুণ কবিদের নিয়ে আমাদের এগিয়ে চলা। আমরা কবি তৈরি করে নিই,  অবশ্যই যাদের মধ্যে সম্ভাবনা আছে । অন্যের দল ভাঙানোর পরিকল্পনা আমাদের নেই কারণ জিরা বাউন্ডারি একটি শুধুমাত্র নতুন পত্রিকার গ্রুপ নয়,  একটি দর্শনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা একটা টিম। দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ মানুষকে শ্রেণী সংগ্রামের লড়াইয়ের মুখে ঠেলে দেয়,  ফলে - লড়াই লড়াই লড়াই চাই ,  লড়াই করে  বাঁচতে চাই -  এই অবস্থান প্রকট থাকে । জিরো বাউন্ডারি দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদকে অন্য ভাবে উপস্থাপিত করতে চাইছে  তা হল - মানুষের দ্বন্দ্বের মধ্যে নিহিত থাকে ব্যক্তিগত স্বাধীন space পাওয়ার আকুতি। অর্থাত্ প্রতিটা মানুষই চায় তার নিজস্ব একটি স্বাধীন space থাকুক যেখানে তার ব্যক্তিত্ব বিকাশ ঘটবে । জিরো বাউন্ডারি সেই স্বাধীন space তৈরির দিকে তার দর্শন প্রক্রিয়া রেখেছে। ফলে এই চিন্তনে পারস্পরিক সম্মান ও বোঝাপড়া থাকছে। একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই থাকছে না। অন্তত বর্তমান পরিস্থিতি সেই দিকেই 



ছবি ঋণ:- অনিন্দ্য কেতন গোস্বামী



রুমা ঢ্যাং অধিকারী



মাণ আর হুঁশ নিয়েই মানুষ একদিন গোষ্ঠীবদ্ধ হয়েছিল তারপর ছোট ছোট গোষ্ঠীতে ভেঙে গিয়ে অজস্র গোষ্ঠীর বিন্দুধারণ করে পৃথিবী সফলতা পায়। উদ্ভূত গোষ্ঠীসমূহ ভিন্ন ভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা ধারণ করে কেউ শীর্ষে পৌঁছালে আবার কেউ সমতলের সরলরেখা থেকে ঈষৎ বেঁকে সামিট করার পথ পেয়েছে আবার কেউ কেউ সমতলকেই পথ করে পার করেছে সমুদ্রের অসংখ্য ঢেউ। কিন্তু একথা অস্বীকার কোনমতেই করা যাবে না যে প্রতিটা গোষ্ঠীর নিজস্ব চেষ্টা, বিভিন্ন কৌশলের পন্থা অবলম্বন করে তারা হাজার হাজার বছর পার করে প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্ব স্থাপন করেছে। আর সমাজ যতই জটিল হয়েছে ততই কাঁকড়ার রাজত্ব বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়েছে। এসব কথা পড়ে আপনি হয়তো ভাবতে বসেছেন যে আমি আবার গোষ্ঠীর কোন পিএইচডি করতে বসে গেছি কিনা আর তা থেকে আপনাদের জ্ঞান দিচ্ছি।  তাহলে ভুল ভাবছেন মশাই। গলা সাধার আগে ওই খিক খিক করা আর কি।  
আচ্ছা,  ভেবে দেখেছেন যে এই কাকঁড়ার রাজত্ব থেকে কবিতার জগতকে কি আলাদা করা যায় কিনা !  আমি বলব- না,  আলাদা করা যায় না।  বিশেষত নেট ও সোশ্যাল মিডিয়া আসার পর এই রাজত্বের উদাহরণ বেড়েই চলেছে। কবিতা লিখতে আসলে একটা মুখোশ, ঠোঁটে মধু ও মনে শকুনিসুলভ কৌশল ধারণ ও বিখ্যাত হবার লোভ লালসা নিয়েই চলতে হয় কিনা জানিনা তবে চারপাশে ঘটতে থাকা এরকম পরিস্থিতির অনেক উদাহরণ দেওয়া যায় বই কি তবে একটা উদাহরণই কাফি হ্যায় বস্। এইরকম এক কাঁকড়াররাজত্ব থেকে আপনি ধরে নিতেই পারেন যে ক-বর্গীয় কোন এক গোষ্ঠীপতি একদিন কবিতার সামিট থেকে নিচে নেমে জ-বর্গীয় গোষ্ঠীজীবনে আড়াল থেকে নাক ঢুকিয়ে আড়ি পাতলেন ও তাকে ভেতর থেকে জাঁতাকলের সাহায্যে গুঁড়াবার চেষ্টা চালালেন।  তবে তেমন কিছু লাভ হলো না।  তখন সোজা বনে গিয়ে শিয়ালকে ডাক পাঠালেন।  শিয়াল চালালো ষড়যন্ত্র, তার সঙ্গে ফাঁদ পেতে রাখা হলো। জ-বর্গীয় গোষ্ঠীপতি অজান্তে ফাঁদে পা দিতেই একজোড়া পিঁপড়ে হেসে উঠলেও জ-বর্গীয় গোষ্ঠীপতি নিজেকে সামলে নিলেন।  এরই মধ্যে জ-বর্গীয় কিছুটা এগিয়ে চললো বনবাদাড় কেটে সাফ করে।  ক-বর্গের তখনও আড়িপাতা অবস্থা।  বাঘ যেমন শিকার পেলেই হালুম করে ওঠে তেমনই একদিন জ-বর্গীয় কাউকে পেলে ঝাঁপিয়ে পড়ে  নিজের পোশাক খুলে আসলরূপ দেখিয়েই দিলেন এইবলে যে ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার গোষ্ঠীতে থাকলে নিজের কাটা কক্ষপথেই ঘুরে যেতে হবে সে যত ভালই কবিতা লিখতে পারুক না কেন। অথচ আড়িপেতে তিনি জ-বর্গীয় কার্যাবলী জানলেও কার্যের অনুপরমানু জানলেন না যেহেতু সামিটের পথে তাদের দেখতে চান না। তাহলে কি দাঁড়ালো!  আপনি কোন পছন্দের গোষ্ঠীর মধ্যে থাকলে তবেই আপনি চান্স পাবেন অন্য গোষ্ঠীর পত্রিকায়।  ভেবে দেখুন যে কবিতার জগতে কবিতা লেখা বড় কথা নাকি গোষ্ঠীবর্গ বড় কথা, ভালো লেখা পেলে ছাপাটা বড় কথা নাকি সে অপছন্দের গোষ্ঠীবর্গীয় বলে না ছাপাটা! আপনারা কি বলেন?  জানান আমাদের কমেন্ট বক্সে। আর নিজেদের এই চিন্তাধারা থেকে একটুও যদি অবস্থাটা বদলানো যায় সেকথা কি নিজেকেই প্রশ্ন করবেন না! এতদূর পড়ে আপনি ভাবতেই পারেন শুধুমুধু এই গল্প পড়ে কেন নিজেকে বদলাব!  ভাবতেই পারেন। আপনার মন তো আমি বদলাতে পারব না কিন্তু গল্পটা কোন রূপকথা নয়।  আপনাদেরই চারপাশে ঘটতে থাকা একটা ঘটনা।  এই ঘটনা নতুন লিখতে আসা ছেলেমেয়েদের মনে কবিতার প্রতি কি প্রভাব ফেলতে পারে ভেবে দেখেছেন!  হ্যা আপনি আপনারা আপনাদের বলছি। উত্তরসূরিদের কি দিয়ে যাচ্ছেন নিজের দিকে তাকিয়ে একবার দেখে নিন। আর কবিতাকে মুখ্য উদ্দেশ্য করে কি আমরা আরও একবার হাতে হাত মিলিয়ে এগিয়ে চলতে পারি না!  এই আশা আপনাদের কাছে রাখলাম।  

জিবাক জুন সংখ্যা প্রকাশ করতে এবার বেশ দেরী হল আমার নিজেরই পারিবারিক সমস্যায় জড়িত হয়ে পড়ায়।  তার জন্য সকল পাঠক লেখকবর্গের কাছে আমি করজোড়ে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।  এক মাস অন্তর মাসের ২ তারিখে জিবাকে প্রতিটা সংখ্যা এপ্রিল পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু এবার দেরি হওয়ায় লেখক ও কবিদের কাছে লেখা জমা দেবার সময় কম থাকবে। তাই আপনারা দেরি না করে লেখা পাঠিয়ে দেবেন তাড়াতাড়ি। অন্যান্য বারের মত এবারেও প্রচুর সংখ্যক কবিতা জমা পড়েছিল। তার মধ্যে থেকে ৬৭ টা কবিতা ও লেখা বাছাই করে নেওয়া হয়েছে। জিবাকে লেখা প্রকাশ করতে হলে একটা মানের ওপর নজর দেওয়া হয়।  কবিতায় উত্তীর্ণ হতে হয়।  যাদের লেখা এবারে মনোনীত হল না আশা রাখব পরের বারে তাদের লেখা নিশ্চয় উত্তীর্ণ কবিতার মানদণ্ডে থাকবে ও জিবাকে প্রকাশ পাবে।  এব্যাপারে আপনি আমাদের হোয়াটস অ্যাপে যুক্ত হতে পারেন জিরো বাউন্ডারি কনসেপ্ট প্রবক্তা আফজল আলির সঙ্গে কথা বলে।  জিবাক যতটা সম্ভব কবিতা পরিশীলিত করার চেষ্টা করে তার মেধা অনুযায়ী। কি একবার জয়েন করে দেখবেন নাকি!  

যাই হোক পরিশেষে বলব,  প্রচুন্ড গরমে নিজেদের সুস্থ রাখুন।  আসন্ন বর্ষার শুভেচ্ছা জানাই প্রতিটা লেখক, কবি, পাঠক, সাহিত্যিক ও শত্রু-মিত্র সবাইকেই। আপনারা ভালো থাকুন আর অন্যকে ভালো রাখুন। জিবাক সেগমেন্ট 'জিরোবিতান' তো আছেই যেখানে সদ্যউদিত নীপা ভাইরাস নিয়ে আমাদেরই এক ডাক্তার ভাই অনুপ বৈরাগী লিখেছেন কিছু কথা। সবাই পড়ে নেবেন ও আবার বলছি সুস্থ থাকতে নিজেকে ভালো রাখুন। 



ছবিঋণ :-  ইন্টারনেট